বাংলাদেশ এমন একটি জায়গা যেখানে যৌনতা এবং যৌনতা নিয়ে আলোচনাকে একটি ট্যাবু মনে করা হয়। জুলহাজ মান্নান ছিলেন একজন সমকামী এবং বাংলাদেশের প্রথম সমকামীতা বিষয়ক ম্যাগাজিন রূপবানের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু তিনি এমন একটি জায়গায় নিজের সমকামীতাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন যা তার জন্য কোনভাবেই নিরাপদ ছিল না। জুলহাজ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৬ সালে, কাজ করতেন ইউএসএআইডিতে। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম সমকামী ব্যক্তি ছিলেন যিনি নিজের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশনকে সামনে নিয়ে আসেন এবং মানুষকে এমন একটি গ্রুপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন যেখানে সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন কোন ব্যাপার না এবং যেখানে সবাই সবার গল্প শেয়ার করতে পারতো, নিজের জীবনের না বলা কথা বলতে পারতো।
যদিও এই গল্প শেয়ার করা মোটেও নিরাপদ ছিল না তাদের জন্য। এই সম্ভাব্য বিপদের কারণে অনেকেই তাদের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করতে পারতো না। কিন্তু তারপরেও, জুলহাজ ছিলেন এ বিষয়ে বেশ সক্রিয়, তার কমিউনিটি বিভিন্ন জায়গায় র্যালি, সমাবেশ ইত্যাদি শুরু করে, এবং সবশেষ বাংলাদেশের প্রথম এলজিবিটি ম্যাগাজিন রূপবান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন। জুলহাজ জানতেন, এই আলোচনাই তাকে গ্লোবাল অ্যাটেনশনের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে যাবে। তবে সেই সাথে এটি বিপদও নিয়ে আসবে।
কিন্তু তিনি ছিলেন নির্ভয়, এবং তার মত প্রকাশের বেলায় সোচ্চার। তিনি ঝুঁকি বুঝতে পেরেছিলেন কিন্তু তবুও তার গঠিত কমিউনিটির জন্য থাকতে এবং কাজ করে যেতে চেয়েছিলেন। এমনকি রূপবানের প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য আসার পরেও তিনি একটুও বিচলিত হননি, পিছপা হননি তার কর্মকান্ড থেকে। অব্যাহত রেখেছিলেন তার প্ল্যাটফর্ম সেইসব মানুষদের জন্য যাদের না বলা কথা শোনার কেউ ছিল না।
জুলহাজের কাছে অপশন ছিল বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার, কিন্তু তিনি যাননি কারণ তিনি তার নিজ হাতে গঠিত কমিউনিটিকে, তার প্ল্যাটফর্মকে ভালোবাসতেন। তার ভাতিজি তাকে একজন সদয়, সংস্কৃতিবান ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন যিনি তিনি যা বিশ্বাস করেন তার পক্ষে দাড়িয়েছেন সবসময়।
কিন্তু হাঁয়! ২৫ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে, জুলহাজ এবং তার বন্ধু ও সহকর্মী তনয় মাহাবুব খুন হন তার নিজ বাসায় ধর্মীয় চরমপন্থীদের দ্বারা। কিন্তু কেন? কি ক্ষতি করেছিলেন তারা ওদের? ঘটনাটি বিশ্বকে করেছে হতবাক, এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ। অপরদিকে, এই ঘটনা আরও এধরণের ঘটনা ঘটাতে সাহস যোগায় ওইসব চরমপন্থিদের, তারা হয়ে ওঠে আরও বেপরোয়া।
জুলহাজ এবং তনয়ের হত্যাকান্ডের পর থমকে যায় তাদের কমিউনিটির কর্মকান্ড, নিরাপত্তাজনিত কারণে অনুমতি পায়না তাদের র্যালি, সমাবেশ। জুলহাজ চেয়েছিলেন এলজিবিটিকিউ অধিকার সম্পর্কে সকলকে অবগত করতে, সমকামীতা বিষয়ক ট্যাবুকে ভেঙ্গে একে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে, কিন্তু তার মৃত্যুর পর ভেস্তে যায় সবকিছু। আমরা আবার জিম্মি হয়ে যাই ওই দুমুখো সন্ত্রাসী মোল্লাদের কাছে, যারা মাদ্রাসায় লুকিয়ে লুকিয়ে শিশু ছাত্রদের বলাৎকার করবে, কিন্তু প্রকাশ্যে সমকামীতার বিরোধীতা করবে, জুলহাজের মতো মানুষদের কতল করবে। এই হলো শান্তির ধর্ম ইসলামের শিক্ষা! এ যেন উপরে ফিটফাট, ভিতরে সদরঘাট!
10 Responses
তুই দেশে আয়, তারপর দেখ হেফাজত তোকে কি করে
নাস্তিকরা আজ ইসলাম ধমের বিরুদ্দে তাদের কারণে ইসলাম ধম প্রায় হুমকির মুখে।
হুম
নাস্তিক ব্লগাররা আমাদের শান্তির ধম ইসলাম ধমকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
নাস্তিক ব্লগাররা আমাদের ইসলাম ধমকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
ইসলাম ধম শান্তুির ধম। কিন্তু কিছু নাস্তিক ব্লগাররা এই ধমকে নিয়ে কুটুক্তি করছে
রাষ্ট্রকে আসলে ধর্ম মুক্ত রাখাটাই সভ্য সমাজের কাজ। ধর্ম থেকে দেশ আলাদা হবে এটাই কাম্য।
কুত্তার বাচ্চা, ধর্ম না থাকলে তোদের মত জারজদের তখন অনেক সুবিধা হয়। তাই না?
শালার নাস্তিকের বাচ্চাদের কথা শুনলেই গা গুলিয়ে আসে
কাফের ও মুরতাদের চিন্তাগুলো সব সময় ধর্ম হীন হয়। কেন হয় বলতে পারিস ওহে কাফেরের বাচ্চা?