বাংলাদেশে ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন বা বাক-স্বাধীনতা নিয়ে কিছু কথা

বাক-স্বাধীনতা বা ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন যেকোন দেশের নাগরিকদের জন্য একটি মৌলিক অধিকার। এটা ছাড়া কোন দেশই সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হতে পারেনা। বর্তমানে বাংলাদেশের যার বিপরীত চিত্রটি ই আমরা দেখতে পাই।

বাংলাদেশ সরকার থেকে শুরু করে একটি চক্র স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের নাগরিকদের সাথে বাক-স্বাধীনতার নামে রীতিমত তামাশা করে চলেছে। যখনই বাক-স্বাধীনতার বিষয়টি সামনে আসে, তখনি একটি মহল যেন কুটিল চক্রান্তে লিপ্ত হয়। দেশের প্রিন্ট মিডিয়া, টেলিভিশন মিডিয়া তথা হালের ডিজিটাল মিডিয়া র সাধীনতাও আজ শাসক গোষ্ঠীর বেড়াজালে বন্দি। সরকার ও সরকারদলীয় ও সমর্থিত সাংবাদিক গোষ্ঠির বলয়ের বাইরে কেউ যেতে পারছেনা। বাংলাদেশের জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের কোন অখ্যাত প্রেস-ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্বে রয়েছে সরকার দলীয় বা সমর্থিত প্যানেলের লোকজন বিধায় বস্তুনিষ্ঠ কোন সংবাদ আসা ত দুরের কথা, সাংবাদিকদের চাটুকারিতাময় সংবাদ পড়তে পড়তে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন নিয়ে যারা এখন ও সোচ্চার বা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগেরই ভাগ্যে জুটছে বঞ্চনা, অসহায়ত্ব কিংবা নির্যাতন। যার ফলে বস্তুনিষ্ঠ ঘরানার সাংবাদিকেরা বেশিরভাগই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সরব হচ্ছেন। অনেকেই ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের পরিবেশিত সংবাদ বা তথ্য সাধারন মানুষ এর দোরগোড়ায় পৌছিয়ে দেবার প্র‍য়াসের মাধ্যমে পেশাটির প্রতি একটা জাস্টিফিকেশন দিয়ে চলেছেন।

ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন এর চর্চার আরো একটি মাধ্যম হলো ব্যক্তিগত ব্লগ এ লেখা, যা ইতোমধ্যে একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে লেখক সমাজের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু সেখানেও সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে দেশের মৌলবাদী জনগোষ্ঠী, ধর্মভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দল, নিষিদ্ধ ঘোষিত জংগী সংগঠন , যারা তথাকথিত ধর্ম রক্ষা র নামে এসব ব্লগারদের কন্ঠরোধ করার অনবরত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

যখনই মৌলিক মানবাধিকারের মত বিষয় নিয়ে কোন লেখক তার ব্লগে বা অন্য কোন মাধ্যমে আওয়াজ তুলার চেষ্টা করেন, তখনই তথাকথিত এই ধর্মের রক্ষকগোষ্ঠী সোচ্চার হয়ে উঠে। নানান উপয়ায়ে এই ব্লগারদেরকে নির্যাতন নিপিড়ন এমন কি হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। শুধু তারা হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হয় না, ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে অনেক ব্লগারকে নির্মম্ভাবে কুপিয়ে , জনসমক্ষে হত্যা করেছে, যার বিচার দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া বাংলাদেশে আর হয়নি কখনোই। বিগত ২ দশকে বাংলাদেশের ব্লগার হত্যার লম্বা লিস্ট দেখলে যে কারোরই মনে ভীতির সঞ্চার হবে এই ভেবে যে শুধু নিজের মনের ভাব প্রকাশ ও সামাজিক অসংগতি কিংবা অন্যায় অত্যাচার নিয়ে লেখালেখি করার কারণেই এমন নির্মম্ভাবে কাউকে হত্যা করার বিধান সভ্য পৃথিবীর কোন দেশে আছে কিনা?

মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা ও ধর্ম ভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে মূলত ধর্মীয় গোড়ামি, ও ধর্মের অপবাখ্যা শিখানো হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কে। যদিও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সেগুলা তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে কিছুটা লিবারেল হবার প্র‍য়াস করে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো ধর্মের অপবাখ্যা , গোড়ামী, ফতোয়া সামাজিক অন্যায়, অনাচার কিংবা মানবাধিকারের প্রশ্নে সেগুলো এখনো কাংখিত লক্ষ্য থেকে যোজন যোজন দুরে রয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। প্রসঙ্গটি উল্লেখ করার কারণ হলো – বাংলাদেশের মতো একটা দেশে ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন নিশ্চিত করার পথে বড় একটা অন্তরায় হলো এই ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গুলো। যেখানে শুধুমাত্র শেখানো হয় কিভাবে ধর্ম নিয়ে কোন প্রসংগ উঠালেই তাদের উপরে আক্রমণ করতে হয়, কিভাবে ধর্মের রক্ষকগোষ্ঠী সেজে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে বলাতকার এর মধ্য জঘন্যতম অপরাধ করে ধর্ম রক্ষার নামে পার পেয়ে যাওয়া যায়। এভাবেই সমাজে অন্যায় অনাচার ও হিংসা বিদ্দেশ এর হার দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

বর্তমান যুগে আমি আপনি আমাদের মনের কথা যদি প্রকাশই করতে না পারলাম তাহলে সমাজে আমাদের মতামতের মূল্যায়ন তথা, আমাদের অস্তীত্ব কোথায় থাকলো – এই সাধারণ ব্যাপারটি দেশের শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে সাধারণ জনসমাজের কাউকেই বুঝানো সম্ভব পর হয়ে উঠেনি এখনো।

আমি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে চাই, আমি চাই সমাজের সকল স্তরের মানুষকে নিয়ে সহমর্মিতা ও মর্যাদার সাথে জীবন যাপন করতে। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার যন্ত্র থেকে শুরু করে, ধর্ম ব্যবসায়িরা ও দেশের মৌলবাদী জনগোষ্ঠী এটা কখনোই সহজভাবে মেনে নিবেনা। আমার বাক-বাক-স্বাধীনতা খর্ব করা হবে, জেল জরিমানা, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হবে, এমনকি আমাকে আপনাকে মেরে ফেলতে তারা দ্বিধা বোধ ওকরবেনা। বর্তমানে বিষয়টা এমন দাড়িয়েছে যে অপরের শেখানো বুলি ও শাসকগোষ্ঠী র পড়ানো বাণী আওড়িয়ে আমাকে আপনাকে সমাজে একজন মস্তিষ্ক বিহীন মানুষের মত বাচতে হবে, আর এটাই বাংলাদেশের যেন নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে – যেখানে অনিয়ম ই যখন নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে, সেখানে বাক-স্বাধীনতার বাস্তবায়ন বিষয় টি তো আমার কে অলীক একটি ধারণা বলেই মনে হয়। তারপরেও আমাকে আপনাকে আশাবাদী হতে হবে, এর বাইরে ত আমাদের আর কিছু করার ও নাই। হয়ত কোন একদিন আমরাও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বাচবো, হয়তো বা আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কিংবা তাদের পরবর্তী কেউ।

19 Responses

  1. তোরা মুসলিম হয়ে আজ তোরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে কথা বলছিস।কুওার বাচ্চা

  2. আপনি যুক্তি দিতে কথা বলতে পারবেন? পারলে আমার যুক্তি গুলো খণ্ডান।

  3. অসাধারন একটা লেখা লিখেছেন ভাই।

  4. হিন্দুরা কখনই আল্লহকে বিশ্বাস করতে পারে না।তারা বিভিন্ন ভাবে শিরক করে বেড়ায়। তাদের এই ভণ্ডামী কপটতার কারণে আজ বামায় হিন্দুদের প্রতি আক্রমন শুরু হয়ে গেছে।বাংলাদেশে এইরকম কিছু মুসলমান নামক কিছু হিন্দু রয়েছে যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করতে পারে না। আর তারা হলো ব্লগার নাস্তিকরা।

  5. ওই শোনা কুলাংগার বাচ্চা তোদের হাত পা বেশি লাম্বা হয়ে গেছে

  6. একমত ভাই আপনার এই লেখার সাথে। আপনি এগিয়ে যান।

  7. দেশ যেই দিকে যাক না কেনো।নাস্তিক ব্লগাররা তাদের স্বাথের জন্য সবকিছু করতে পারবে সুযোগে নাস্তিকরা বেড়ে উঠে।এই সব কুওার বাচ্চাদের যেখানে পাবো সেখানে কুকোরের মতো লেলিয়ে মারবো

  8. এই লেখায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে লেখায় আমি নিন্দা প্রকাশ করছি।

  9. এই শয়তান এর বাচ্চা মুসলিমদের প্রতি তোদের এতো ঘৃণা কেনো।

  10. মুসলিমদের বিরুদ্ধে লেখতে তোদের এত উৎসাহ কেনো।মুসলিমরা তোদের কি করছে।

  11. এই কুলাংগার বাচ্চা এইসব লেখা বন্ধ কর না হলে পরিস্থিতি কিন্তু খারাপ হবে।

  12. এই মাদারচুদ এর বাচ্চা তোর এই লেখাটি কেটে ফেল বলছি।

  13. সত্যি বলছেন ভাই আপনার এই লেখাকে আমি সমর্থন করি।

  14. কেনো নাস্তিকরা এতে তৎপর হয়ে উঠেছে

  15. নাস্তিক ব্লগারদের প্রতিটি কাজকে আমি ঘৃণা করি।

  16. নাস্তিকরা সবসময় সরকারে আইনের বিরুদ্ধে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *